কুমিল্লায় নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকালো স্কুলছাত্রী

মোঃ সাফি।।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার এক নির্মাণশ্রমিকের ৫ মেয়ে ও ১ ছেলে। বড় দুই মেয়েকে আগেই বিয়ে দিয়েছেন। অভাবের সংসার টেনে নিতে কষ্ট হয় বলে তৃতীয় মেয়েরও বিয়ে ঠিক করেন।

তার তৃতীয় মেয়ে স্থানীয় আলেকজান মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। আগামী বুধবার তার বিয়ের দিন ছিল।

তবে কিশোরী মেয়েটি বিয়ে নয়, এখন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়। পরিবারের সদস্যরা তার আপত্তি মেনে নেয়নি।

মেয়েটি সোমবার সকালে স্কুলে গিয়ে অধ্যক্ষ আবদুল মান্নানকে বিষয়টি জানায়। অধ্যক্ষ গিয়ে বাল্যবিয়ের খবরটি দেন ইউপি মেম্বার খায়েরুল ইসলাম খায়েরকে। এরপর তারা দুজন গিয়ে মেয়ের বাবাকে বাল্যবিয়ের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানিয়ে মেয়ের বিয়ে বন্ধ করতে রাজি করান।

সেইসঙ্গে মেয়েটির পড়াশোনার খরচ বহন করার কথা জানান অধ্যক্ষ। আর ইউপি মেম্বার দিলেন অন্যান্য সহযোগিতার আশ্বাস।

অধ্যক্ষ আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমি মেয়েটির বাবাকে বলেছি, বাল্যবিয়ে ভালো না। বাল্যবিয়ের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরেছি। মেয়েটির লেখাপড়ার জন্য বই-খাতা-কলমসহ প্রাতিষ্ঠানিক সব খরচ আমি বহন করব। এসব বলার পর মেয়েটির বাবা বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হয়।’

মেম্বার খায়েরুল ইসলাম বলেন, ‘অধ্যক্ষ সাহেবের কাছে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের বাড়িতে উপস্থিত হই। আসলেই পরিবারটি অভাব অনটনে আছে। তবে আমি মেয়ের বাবাকে বলেছি অধ্যক্ষ সাহেব লেখাপড়ার খরচ চালাবে। আমি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল-ডালের ব্যবস্থা করব। আপনি বিয়ে বন্ধ করেন। মেয়ের বাবা আবদুল হক রাজি হয়।’

মেয়েটির বাবা এ ঘটনায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমার পাঁচ সন্তানের মধ্যে এই মেয়ে তৃতীয়। আগে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছি কম বয়সে। আমি উর্পাজন করতে পারলে সংসার চলে নয়তো না।

‘তাই অভাবের সংসারে এবার আমার তৃতীয় কন্যাকেও বিয়ে দিতে দিন-তারিখ ঠিক করেছি। তবে মেম্বর সাহেব ও স্কুলের হেড মাস্টারের কথা শুনে বিয়েটা বন্ধ করেছি।’

বিয়ে বন্ধ হওয়ায় বেশ খুশি সেই কিশোরী। সে বলে, ‘আমি এখন বিয়ে করতে চাই না। আমি লেখাপড়া করব। আমি কিছু হতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page